আবহাওয়া, বয়স এবং অন্যান্য অনেক কারণে আমাদের ত্বকে প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ হ্রাস পায়। এতে ত্বক ডিহাইড্রেটেড এবং নিষ্প্রাণ দেখায়। ডিহাইড্রেটেড স্কিন থেকে মুক্তির জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকরী যে উপাদানটি, সেটি হলো টোনার।

টোনার কি?

টোনার হল একটি দ্রুত-অনুপ্রবেশকারী তরল যা ত্বককে দ্রুত হাইড্রেশন সরবরাহ করে এবং ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে কিছু মৃত কোষ অপসারণ করতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে, আপনার সংকুচিত ত্বককে করবে মসৃণ এবং তাজা। 

টোনার কেন ব্যবহার করবেন?

শীত, গ্রীষ্ম, কিংবা বর্ষা সকল ঋতুতেই আমাদের ত্বকের উপর দিয়ে বেশ ধকল যায়। সারাদিনের পরিশ্রম, ধকল ও ধুলাবালিতে লাবণ্য হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে যায় ত্বক। নিস্তেজ ত্বকে সহজেই জীবাণুর সংক্রমণ হয়, দেখা দেয় নানা সমস্যা।

তাই আমাদের চেহারায় রূপ-লাবণ্য ফুটিয়ে তোলা, তারুণ্য ধরে রাখা, সর্বোপরি ত্বকের সুস্থতার জন্য চাই এর নিয়মিত পরিচর্যা, দরকার একটি বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিনের। এই বেসিক স্কিন কেয়ারের একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ত্বকের টোনিং করা।

আমরা অনেকেই ত্বকের টোনিং করের ফলে কি কি সুবিধা পায় তা জানি না, ফলে অনেকেই টোনিং করাকে স্কিন কেয়ার এর রুটিন থেকে বাদ দেয়। টোনার ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের কি কি উপকার পাবেন তা দেওয়া হলো-

  • ক্লিঞ্জিং করার পরেও আপনার ত্বকে যদি কোনো ইম্পিওরিটি থেকে যায় তাহলে তা দূর কর‍তে সাহায্য করে।
  •  ক্লিঞ্জিং এর কারণে আপনার লোমকূপগুলোর মুখ যখন খোলা অবস্থায় থাকে তা বন্ধ করতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের তৈলাক্তভাব নিয়ন্ত্রন করে।
  • ত্বকের পি.এইচ ভারসাম্য বজায় রাখে।
  • ময়েশ্চারাইজার গ্রহণের জন্য ত্বককে প্রস্তুত করে।
  • ত্বকে পানির পরিমাণ বজায় রাখে।

টোনারের উপাদান সমূহ

টোনার এর ওয়াটারি অংশটুকু আপনার ত্বক খুব সহজেই শুষে নেয়, যার ফলে ত্বককে আরো প্রাণবন্ত দেখায়।

টোনার আর হাইড্রেটর এর মতো হাইড্রেটিং প্রোডাক্ট গুলো আমাদের ত্বকে পানির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

বেশিরভাগ টোনারই হিউমেকটেন্ট বা এসেনশিয়াল ওয়েল এর মতো সক্রিয় উপাদান দিয়ে তৈরি। হিউমেকটেন্ট পরিবেশ থেকে ত্বকে পানি নিয়ে আসে ।

অর্থাৎ এটি স্কিনে পানিকে আটকে রাখে। হায়ালুরনিক এসিড এর মতো হিউম্যাক্ট্যান্ট আর্দ্র আবহাওয়াতে দুর্দান্ত কাজ করে।

টোনার ব্যবহারের কারন

অনেকেই ভেবে থাকেন যে আমরা যে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করছি তাতেই তো hydrating ingredients রয়েছে। আমাদের আবার আলাদা করে হাইড্রেটর বা টোনার ব্যবহারের কি দরকার!

তাহলে বলি, ময়েশ্চারাইজারে যে hydrating element বা toning elements থাকে তার মলিকিউলার সাইজ সাধারণ হাইড্রেটর বা টোনারের মলিকিউলার সাইজের চেয়ে বড় হয়, যার ফলে তা আপনার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না।

ডিহাইড্রেটেড অথবা ড্রাই স্কিনে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ইউজ করতে হয়। ভেবে দেখুন, একটা শুষ্ক স্পঞ্জে আপনি একগাদা ময়েশ্চারাইজার ঢেলে দিলেন একে ময়েশ্চারাইজ করতে। অপরদিকে ভেজা স্পঞ্জ ময়েশ্চারাইজ করতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করছেন।

কোন ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন পড়বে? হ্যাঁ, শুষ্ক স্পঞ্জের ক্ষেত্রে। এবার আমাদের স্কিনটাকে এই শুষ্ক বা ডিহাইড্রেটেড স্পঞ্জের সাথে তুলনা করে দেখি। ত্বকে প্রথমেই টোনার এপ্লাই করে নিলে তা আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড করে এবং ময়েশ্চারাইজার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করে।

টোনার ব্যবহারের নিয়ম

১) প্রথমে ক্লিঞ্জার দিয়ে ত্বক পরিস্কার করতে হবে।

২) ক্লিঞ্জিং এর পরপরি টোনার ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ক্লিঞ্জিং করার পরেও আপনার ত্বকে যদি কোনো ময়লা থেকে যায় তাহলে তা দূর কর‍তে সাহায্য করবে।

৩) টোনিং করার ৭-৮ মিনিট পরে  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।