আপনার ত্বক কি খুব সহজেই কোন কিছু যেমন- ধুলোবালি, ময়লা কিংবা প্রসাধনির সংস্পর্শে এসে প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং এর ফলে ত্বকে লালচে ভাব, দানা দানা র্যাশ বা চুলকানির প্রকোপ হয়। তাহলে আমাদের এই লেখাটি আপনার মত সেনসিটিভ ত্বকের যত্ন নিয়ে যারা চিন্তিত তাদের জন্য।
সেনসিটিভ ত্বকঃ
আসলে সেনসেটিভ বা সংবেদনশীল ত্বক নামে ত্বকের কোন ধরন নেই, এটি ত্বকের একটি বিশেষ অবস্থা মাত্র। শুষ্ক, স্বাভাবিক, তৈলাক্ত ত্বকও অনেক সময় সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে সঠিক পরিচর্যার অভাবে।
কাজেই সংবেদনশীল ত্বকের প্রসাধনী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের সবার আগে জানা দরকার আমাদের ত্বক কেন সংবেদনশীল হয়ে উঠে। তাহলে চলুন আমরা ত্বকের সংবেদনশীলতার কারণগুলিকে জানার চেস্টা করি।
Shop with Water Lotus
সংবেদনশীল ত্বকের কারণঃ
আমাদের ত্বকের এপিডার্মিসের স্ট্র্যাটাম কর্নিয়ামে একটি ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজিং ব্যারিয়ার রয়েছে। এই ব্যারিয়ার যখন দুর্বল হয়ে যায় তখন আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাটাও বাইরের বস্তু দিয়ে প্রভাবিত হয়। আর তখন থেকেই মূলত আমাদের ত্বকের সংবেদনশীলতার শুরু হয়।
অনিদ্রা, দূষণ, মানসিক চাপ, আবহাওয়া, অনার্দ্র ত্বক, ভুল প্রসাধনীর ব্যবহার ইত্যাদি কারন এই ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। তাই সংবেদনশীল ত্বকের প্রসাধনীর ক্ষেত্রে খুবই সচেতন হতে হবে।
সেনসিটিভ ত্বকের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয় উপাদান সমূহ
সংবেদনশীল ত্বকের প্রসাধনীর উপাদানগুলি কৃত্তিম রঙ, গন্ধ বা ক্ষতিকারক রাসায়নিক মুক্ত হওয়া উচিত। তাহলে চলুন সংবেদনশীল ত্বকের প্রসাধনীতে ব্যবহৃত এরকম কিছু উপাদান সম্পর্কে আমরা জেনে নেই।
ওটস এক্সট্রাক্ট :
সংবেদনশীল ত্বকের প্রসাধনীতে ওটস এক্সট্রাক্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের শুষ্কতা, বিভিন্ন ধরনের রেশ, কালো দাগ, চুল্কানি, একজিমা, লালচে ভাব দূর করতে ওটস খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ওটসে বিদ্যমান রয়েছে অ্যাভাসিন, স্যাপোনিন, ফ্ল্যাভোনয়েড। অ্যাভাসিন ত্বকে ছত্রাক নাশক হিসেবে কাজ করে, স্যাপোনিন ত্বক কিঞ্জিং করে আর ফ্ল্যাভোনয়েড সূর্যের ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টঃ
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক ফ্রি –রেডিক্যাল বা মুক্ত মৌল গুলিকে নিষ্ক্রিয় করার মধ্যে দিয়ে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে। এটি প্রদাহ নাশক, ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়।
অ্যালোভেরাঃ
অ্যালোভেরা প্রদাহ উদ্রেককারী ব্র্যাডিকাইনিন ও হিসটামিনের নিঃসরণ কমায় এবং এর “থুপিউল” অ্যাসপিরিনের ন্যায় প্রদাহ নাশ করতে পারে। এটি ত্বকের চুল্কানি ও জ্বালাপোড়া কমায়।
বিটা গ্লুকেনঃ
এতে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেন্টরি উপাদান রয়েছে যা সংবেদনশীল ত্বকের লালচে ভাব সহ অন্যান্য উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
নিয়াসিনামাইড :
নিয়াসিনামাইড ত্বকের এপিডার্মিসের ময়েশ্চারাইজিং ব্যারিয়ারকে শক্তিশালী করার মধ্যে দিয়ে ত্বকের পানির অপচয় রোধ করে, এটি পরিবেশের ক্ষতিকারক উপাদান থেকে ত্বককে রক্ষা করে, এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেন্টরি উপাদান ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়।
প্যানথেনল :
প্যানথেনল এক ধরনের প্রো-ভিটামিন ৫। প্যানথেনল ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুগুলিকে মেরামত করে, সংযোগকারী টিস্যু ফাইবারকে শক্তিশালী করে। একই সঙ্গে প্যানথেনল এর প্রদাহ বিরোধী প্রভাব ও রয়েছে। অর্থাৎ ত্বকের জ্বালাপোড়া, ক্ষত ,ফাটল ইত্যাদি দূর করে।
এছাড়াও কিউকাম্বার সিড অয়েল, উইচহেজেল,বিসাবলস ইত্যাদি উপাদানও সংবেদনশীল ত্বকের ত্বকের প্রসাধনীতে বেঁছে নিতে পারেন।
তথ্যসুত্র : https://www.greenpeople.co.uk/blogs/the-beauty-hub/7-of-the-best-natural-ingredients-for-sensitive-skin